অপ্সারা
_ মারুফ সরকার মুন্না
এই নগরী যেন প্রাচীন ব্যাবিলনের কোনো শূন্যস্তম্ভ,
যেখানে মানুষের হৃদয় ঘুরপাক খায় এক বিভ্রান্ত মরীচিকায়—
সেই প্রেম, যেন মিসরের চিরন্তন মমির মতো,
জড়ো হয়ে থাকে কেবল অতীতের ধূলিতে।
হে প্রেমিকা, তুমি কি সেই অনন্ত চুম্বন,
যা গ্রিক দেবীর ঠোঁটে আঁকা অমরত্বের প্রতীক,
যার স্পর্শে আমার নিঃশেষিত আত্মা জেগে ওঠে এক নতুন মহাবিশ্বের প্রতিধ্বনিতে?
তোমার নাভী কি সেই গঙ্গা, যেখান থেকে জেগে ওঠে প্রাচীন জনপদের মতো গভীর তৃষ্ণার্ত আকাঙ্ক্ষা?
তুমি এসো না, ভগ্নপ্রাচীরের মতো;
এসো যেন তাজমহলের শ্বেতশুভ্রতা, যেখানে প্রেমের চিরায়ত কাঠামো দাঁড়িয়ে আছে অসীম অনন্তের প্রতিজ্ঞায়।
তুমি এসো আমার কাছে মেসোপটেমিয়ার নদীর মতো,
যা দুই তীরের মাঝে বাঁধা অথচ ছুটে চলে অসীম সাগরের দিকে, তোমার শরীরের প্রতিটি বাঁক যেন সেই মোহনার মতো, যেখানে আমার সমস্ত পিপাসা এসে মিশে যায় প্রশান্তিতে ফারিন।
তোমার চুম্বন যেন হারিয়ে যাওয়া আটলান্টিসের রহস্যময়তা, গভীর, অন্তহীন, স্পর্শে এক অলৌকিক জলজগৎ,
যেখানে ডুবে গিয়ে আমি খুঁজে পাই এক অদ্ভুত গভীর শূন্যতা— কিন্তু তবুও যেন পূর্ণ হয়ে যাই বোধের অদ্ভুত বিস্ময়ে।
তোমার শরীর যেন প্রাচীন ইন্দুস সভ্যতার সুসংবদ্ধ অলংকার— যেখানে প্রতিটি ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে আছে বোধের প্রত্নতত্ত্ব, আমার হাত সেই প্রত্নসন্ধানীর মতো, ছুঁয়ে খোঁজে এক হারানো পৃথিবীর সারাংশ।
এই শহর আমাদের নয়—
এ যেন মায়ার মিশর, যার পিরামিডের ভিতরে কেবলই শূন্যতা, যেখানে আমরা দেবতার আদলে বাঁধা পুতুল মাত্র, প্রেমের শিকলে বেঁধে আছি এক দেহজ মোহে।
এসো, তুমি আর আমি গড়ে তুলি নতুন সভ্যতার প্রতিমূর্তি, যেখানে প্রাচীন আত্মাদের রক্ত মিশে আছে মাটির গভীরে। তোমার চুম্বনের আলোয় সে সভ্যতার মন্দির যেন জেগে থাকে, প্রতিটি স্তম্ভে, প্রতিটি ভাঁজে জড়িয়ে থাকে প্রেমের সেই শাশ্বত ধ্বনি, যা কোনো ভাঙা প্রাচীরেও মুছে যায় না, মুছে যায় না সময়ের ধুলোতেও।
No comments:
Post a Comment